বাংলাদেশ - আগামী দিনের জ্বালানির পথে
নবায়নযোগ্য ও নিরাপদ জ্বালানির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একসাথে কাজ করছে। আমরা টেকসই জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগ করছি, যা মানুষের জীবনের বর্তমান ও ভবিষ্যতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের মানুষ বাতাস, সূর্য ও পানির শক্তি থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
I’ve got the power খেলার জন্য
আমি নুসরাত জাহান। ক্রিকেট আমার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ছোটবেলা থেকেই এর প্রতি আমার ভালোবাসা। বড় ম্যাচের প্রস্তুতি বা স্কুল শেষে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা — ক্রিকেট আমাকে সবসময় আত্মবিশ্বাসী আর স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করে।
নবায়নযোগ্য ও টেকসই জ্বালানির সুবিধায় আমাদের অনুশীলন মাঠের ফ্লাডলাইটগুলো এখন অনেক রাত পর্যন্ত জ্বলে। তাই স্কুল শেষে ও সন্ধ্যার পরে আরও অনেকক্ষণ খেলা ও অনুশীলনের সুযোগ পাই।
মাঠে অতিরিক্ত প্রতিটা ঘণ্টা আমার দক্ষতা বাড়ায় ও আমাকে বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি পরার স্বপ্নের আরও কাছাকাছি নিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি, জীবনের প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানো উচিত — হোক তা ক্রিকেট বা বিদ্যুতের ব্যবহার। তাই আমি টেকসই সমাধানকে বেছে নিই।
I’ve got the power ভবিষ্যতের জন্য
আমি সেলিম মোল্লা। আমার ই-রিকশা শুধু একটি যানবাহন নয়—এটা আমার স্বপ্নপূরণের পথ। কালিগঞ্জে আমি প্রতিদিন যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেই। এর ফলে আমার পরিবারের জন্য আয়ও নিশ্চিত হয়।
নিরাপদ বিদ্যুতের কারণে আমার রিকশা বেশি সময় চলতে পারে, বিদ্যুৎ খরচ বাঁচে, আর কাজও অনেক সহজ হয়।
প্রতিদিন আমি আমার স্বপ্নের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যাই। আমার স্বপ্ন নিজের একটি রিকশা কেনা, সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগানো আর একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। আমি সামনে এগিয়ে যেতে চাই — হোক তা রাস্তায় বা বিদ্যুতের ব্যবহারে। এটাই আমাদের এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এগিয়ে যাওয়ার উপায়।
সমর্থক
ক্রিটিকাল মাহমুদ

ক্রিটিকাল মাহমুদ একজন বাংলাদেশি র্যাপার এবং কবি, যিনি চিন্তা উদ্রেককারী গানের কথা এবং শক্তিশালী গায়কীর জন্য পরিচিত। ক্লাসিক্যাল বাংলা সংস্কৃতির সাথে সমসাময়িক হিপ হপের তাঁর কাজগুলো অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং মানুষের চিন্তাভাবনাকে অনুপ্রাণিত করে। তার সঙ্গীতের ভেতরে ক্রিটিকাল মাহমুদ জরুরি সামাজিক সমস্যাগুলিকে তুলে আনেন এবং অধিকতর সচেতন ও ন্যায্য ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখান।
আমিন হান্নান

আমিন হান্নান চৌধুরী বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী তরুণ গল্পকারদের অন্যতম—যিনি স্ট্যান্ড-আপ কমেডি, সামাজিক অন্তর্দৃষ্টি এবং কমিউনিটি গঠনের মিশ্রণ ঘটান। ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড এবং চালানের মতো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, আমিন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং সমাজের উপর প্রখর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় বিনোদনকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। মঞ্চের বাইরে, তিনি ফেসবুকের #FacebookIRL Stories-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে নির্মাতা এবং পরিবর্তনকারীদের উন্নত করেন। তার মূলের উদ্দেশ্য এবং গর্বের দ্বারা চালিত হয়ে, আমিন কেবল বিনোদনের জন্যই নয়, বরং চিন্তাভাবনার স্ফুলিঙ্গ তৈরি করতে এবং বাংলাদেশ জুড়ে মানুষকে একত্রিত করার জন্য হাস্যরস ব্যবহার করছেন।
বাংলাদেশে এনার্জি প্রোগ্রাম
পোশাক শিল্পে পরিবেশগত ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহ-অর্থায়নে পরিচালিত এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য পোশাক শিল্পে নিরাপত্তা বাড়ানো, পরিবেশগত ক্ষতিকর প্রভাব কমানো এবং শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা। এই উদ্যোগের আওতায় পোশাক কারখানাগুলো পাচ্ছে উন্নত অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ নিরাপত্তা প্রযুক্তি, ভবনের মজবুত কাঠামো, ছাদে সোলার প্যানেল, বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি, পানির বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট ও দুষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা; এবং কর্মপরিবেশে উন্নতি (যেমন—ভালো কাজের পরিবেশ, কর্মজীবী মায়েদের জন্য সহায়তা ও চিকিৎসা সুবিধা)। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১৫০টিরও বেশি কারখানা সরাসরি উপকৃত হয়েছে, যার ফলে প্রায় আড়াই লক্ষ শ্রমিক ভালো কাজের পরিবেশ পাচ্ছেন যাদের অধিকাংশই নারী। একই সাথে এটি বাংলাদেশের পোশাক খাতকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আরও এগিয়ে নিচ্ছে।
ঢাকায় আরও নির্ভরযোগ্য এবং কার্যকর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা
এই প্রকল্পের লক্ষ্য বাংলাদেশকে টেকসই জ্বালানির পথে আরও দ্রুত এগিয়ে নেওয়া — বিশেষভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতায়। ২০২৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বিদ্যুৎ খাতের আইনি কাঠামো উন্নত করবে, দক্ষতা বাড়াবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নারী ও তরুণ পেশাজীবীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। এই উদ্যোগ বিদ্যুৎ খাতকে আরও কার্যকর ও টেকসই করবে, সচেতনতা বাড়াবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে। এর ফলে গ্রাহক নবায়নযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ পাবেন। এছাড়াও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অনেকেই সরাসরি উপকৃত হবেন।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির অগ্রযাত্রার পথে
এই প্রকল্পের লক্ষ্য বাংলাদেশকে টেকসই জ্বালানির পথে আরও দ্রুত এগিয়ে নেওয়া — বিশেষভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতায়। ২০২৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বিদ্যুৎ খাতের আইনি কাঠামো উন্নত করবে, দক্ষতা বাড়াবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নারী ও তরুণ পেশাজীবীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। এই উদ্যোগ বিদ্যুৎ খাতকে আরও কার্যকর ও টেকসই করবে, সচেতনতা বাড়াবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে। এর ফলে গ্রাহক নবায়নযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ পাবেন। এছাড়াও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অনেকেই সরাসরি উপকৃত হবেন।
বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা – আরও নির্ভরযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাস্তবায়িত 'বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি সুবিধা' প্রকল্পটি দেশের জনগণ, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারীদের জন্য জ্বালানির প্রাপ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সোলার, বাতাস ও ব্যাটারি সংরক্ষণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৭৫০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করা হবে। এই প্রকল্প জাতীয় গ্রিডকে শক্তিশালী করবে, বিদ্যুৎ সংযোগ বৃদ্ধি করবে এবং বাসাবাড়ি ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরও নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুৎ/জ্বালানি নিশ্চিত করবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস এবং জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, এই উদ্যোগ শুধু বাংলাদেশকে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির পথেই এগিয়ে নিয়ে যাবে না বরং দেশের মানুষের জীবনমানও উন্নত করবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক জ্বালানি সংযোগ শক্তিশালীকরণ
ইইউ অর্থায়নে এই প্রকল্পের লক্ষ্য বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে আন্তদেশীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো। পলিসি, সুশাসন ও কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়নের মাধ্যমে এই উদ্যোগ আঞ্চলিক জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এবং অর্থনৈতিক উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্প আন্তদেশীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্য, নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্তর্ভুক্তি এবং নারী ও পুরুষ সকলের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি পাবে এবং টেকসই জ্বালানি অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়বে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশের রূপান্তর
এই প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি খাতকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরে সহায়তা করছে, যার ফলে দেশের জ্বালানির চাহিদা টেকসইভাবে পূরণ হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় প্রকল্পগুলো জ্বালানি পলিসির উন্নতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানির বাজার সম্প্রসারণ, গ্রিড অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানোর ওপর মনোযোগ দিচ্ছে। এর ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধি, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাস এবং জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদী প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নত করবে, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করবে এবং নারী ও সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভবিষ্যতের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় "শক্তিকন্যা" একটি অনন্য উদ্যোগ, যা তরুণ নারী প্রকৌশলীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির রূপান্তরকে এগিয়ে নিচ্ছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য নারী উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীদের জন্য কর্মসংস্থান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব বাড়ে। "শক্তিকন্যা" ভবিষ্যতের নারী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করে এবং টেকসই জ্বালানি ও জেন্ডার-সমতা ভিত্তিক নীতিমালা নিয়ে সচেতনতা তৈরি করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নারীরা কেবল নিজের ভবিষ্যৎই গড়ে তুলছেন না, বরং দেশের জ্বালানি খাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন।